দস্যিকালের কথা
।।সুমন বিশ্বাস।।
বৈরাগীদের আমড়া, নোয়াইল
কী ভালো তার স্বাদ,
দস্যিদলের দখল ছিলো
যতই উঠুক নাদ।
খালপারে আম, কাঁঠাল পেতাম
বিরাট বাঁশের বন,
সব আমাদের লাগতো যদি
করতে উন্নয়ন।
বড়োবাবুর জাম, জামরুল
যাইনি কভু ছেড়ে,
পরের তেঁতুল, তাল, সুপারি
বরই খেতাম পেড়ে।
হিন্দুপাড়ার নারকেল গাছ
ফল পাড়াতে ভোর,
ওঠা কি বা তলায় খোটা
যার বাড়ি সেই চোর।
নরেন সাহার বাগানবাড়ি
ফুটতো নানান ফুল,
বিয়ে, পুজোয় চাওয়া, চুরি
করতে হয়নি ভুল।
খেজুরগাছে বসলে হাড়ি
কেটে পেঁপের নল,
রাতে পেড়ে পান করতাম
গেছো দস্যিদল।
নষ্টচন্দ্রে হাড়ি-পাতিল
হাঁস, মুরগি, ঢেঁকি,
হারিয়ে যেত; মালিক জেনে
রাগ করতো সে কী!
দোলপুজোতে দলবেঁধে সব
যেতাম বাড়ি বাড়ি,
রঙের খেলায় মেতে যেত
খুশির সীমা ছাড়ি।
চৈত্রমাসের শেষের দিকে
গাইতাম পটগান,
রথের মেলা, নৌকা বাইচ
সবেই প্রবল টান।
দুর্গাপুজো, নতুন জামা
ঢাকের বাদ্য, নাচ,
গোরুর রাখাল, নাড়া তোলা
ধরতে যেতাম মাছ।
হাজরাতলা, খেজুর ভাঙা
পাগলচাঁদের মেলা,
আজও আছে; মন তবু আর
পায় না সুখের ভেলা।

0 Comments