চিল (২)
- কাকলি চক্রবর্তী
ঝটপট ব্রেকফাস্ট বানিয়ে,
কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে,
সে অস্মিতার ব্রেকফাস্ট টেবিলে গুছিয়ে রেখে,
বাড়ি ছেড়ে অফিসের পথে পাড়ি দিতে দিতে,
আড়চোখে একবার আকাশের দিকে তাকালো সে ।
চিলটা একই ভাবে একই স্থানে,
তেমনি ঘুড়ে ঘুড়ে উড়ে চলেছে।
কিন্তু তার চোখ?
ওর চোখদুটো কি তাকেই খুঁজছে?
বারান্দায় তাকে না দেখে,
ওর সন্ধানী দৃষ্টি তাকে ধরে ফেলেছে
বাড়ি থেকে বেরোবার পথে।
কি চায় চিল?
কেন তাকে টার্গেট করছে?
এর পিছনে কার পাকা মাথা আছে?
পাখিটাকে কে বা কারা পাঠিয়েছে তার পিছনে?
গুপ্তচর বৃত্তি করছে পাখিটা?
সেই আগেকার দিনে যেমন পায়রা বা
বাজ পাখি করতো।
নইলে এমনটাতো সাধারণত হয়না।
টানা এতটা সময় এক ভাবে একই স্থানে উড়ে চলা,
এ ঘটনা তো স্বাভাবিক নয়।
এর মধ্যে কোনো অশরীরী শক্তি বা ঈশ্বরিক শক্তি আছে,
নইলে এমনটা ঘটছে কেন।
আচ্ছা, এমনটা নয়তো যে,
চিলটা তাকে নয়,
অস্মিতাকে ফলো করছে?
ও অস্মিতাকে খুঁজছে নাতো?
হায় ভগবান অস্মিতো বাড়িতে একা।
চিলটা যদি কোনো ফাঁক ফুকো দিয়ে গলে
ঘরে ঢুকে পরে?
আচ্ছা, সব জানালা দরজা বন্ধ করেছেতো সে?
ওই দক্ষিণ দিকের ঘরটার জানালার একটা কাঁচ
ভাঙা অবস্থায় রয়েছে।
কিছুতেই মনেকরে বদলানো হচ্ছেনা।
চিলটা যদি ওই ফাঁকটুকু দেখে থাকে,
যদি সেখান দিয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে।
চিল নিশ্চই দেখেছে সে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছেন।
আর তাই অস্মিকে বাড়িতে একা দেখে,
বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করবে।
কি করবে সে?
দরদর করে ঘামতে শুরু করেছে সে,
অসুস্থ বোধ করছে।
বুঝে উঠতে পারছেনা কি করবে।
বাড়ি ফিরে যাবে?
আজ না হয় অফিস বাতিল করে
বাড়িতেই থেকে যাবে।
না না, তা হবার জো নেই।
এই সময় অফিসের খুব চাপ,
ইয়ার এন্ডিং চলছে।
সবাই খুব ব্যস্ত।
সে না গেলে বস যে কি করে বসবে
তা কে জানে।
ভাশ্বর সব রকম দুঃশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলে অফিসের
পথ ধরলো।
তখনো চিল তেমনি পাক খাচ্ছে আকাশে।
কেজানে মনে মনে কি ফন্দি আঁটছে।
ক্রমশঃ
0 Comments