চিল (১)

 চিল (১)

- কাকলি চক্রবর্তী 



অনেক উঁচুতে একটা চিল উড়ছে।

চিলটার উদ্দেশ্য ঠিক বুঝে উঠতে পারছেনা ভাস্বর।

ক্রমাগত একটি স্থানকে লক্ষ্য করেই চিলটি বৃত্তাকারে

উড়ে চলেছে।

ভোর ভোর ঘুম ভেঙে বারান্দায় দাঁড়ায় সে।

আধ ঘন্টার মত এইখানেই,

বারান্দায় সার দিয়ে ঝিম মেরে,

সবে সবে ঘুম ভেঙে উঠে বসা গাছগুলোকে ছুঁয়ে

দেখে সে।

ঠিক তেমনি বারান্দার বাইরে,

পথের ধারে গজিয়ে ওঠা গাছগুলোকে ভারি

ভালোবাসে সে।

দূর থেকেই তাদের খোঁজ খবর করে,

কুশল সংবাদ আদান প্রদানও করে,

তারপর দিনের অন্যান্য কাজকর্ম সারে।

সেদিন এ ভাবেই সকালে বারান্দার বাইরে বসে

তাকিয়ে ছিল গুলমোহরের সদ্য ফুটেওঠা কুড়িগুলোর

দিকে।

ঠিক তখনি তার নজরে পরে উড়তে থাকা চিলটাকে।

প্রথমে সে ভেবেছিলো,

কিছুক্ষন ওড়ার পর চিলটা হয়তো অন্য কোথাও উড়ে যাবে।

কিন্তু না,

সে বৃত্তাকারে একভাবে উড়তেই থাকছে

একই স্থানে।

তার ক্রুর দৃষ্টি সরছে না এক চুলও,

কোনো একটি বস্তুকে কেন্দ্র করে তার দৃষ্টি নিবদ্ধ।

ভাস্বরও এক ভাবে তার দিকেই তাকিয়ে।

একটা সময় তার মনে হতে থাকে,

চিলটাও কি তার দিকেই তাকিয়ে?

ওর লক্ষ্য বস্তু কি সে?

চিলটার তার সাথে কি সম্পর্ক থাকতে পারে?

না, না,

তা কেন হবে।

নিজের মনেই হাসে ভাস্বর।

এ সব কি ভাবছে সে?

একটা সামান্য পাখি,

সে হয়তো নিজের মনেই উড়ে বেড়াচ্ছে।

এসব নিয়ে সে বড্ড বেশি ভাবছে।

ভাস্বর ভিতরে চলে যায়,

অফিসে দেরি হয়ে যাচ্ছে,

দ্রুত তৈরী হতে থাকে সে।


দেওয়াল জুড়ে অস্মিতার ছবি।

অস্মিতা সত্যি খুব সুন্দরী।

ওর চোখ দুটো সব সময় হাসছে।

খুব জীবন্ত দুটো চোখ,

সর্বদা যেন তাকে চোখে চোখে রাখছে।

তা রাখুক।

অস্মিতার অধিকার আছে,

সম্পূর্ণ অধিকার আছে তার ওপর।

তার বড়ো আদরের অস্মি,

তার স্ত্রী।


ক্রমশঃ

Post a Comment

0 Comments