সমর্পন (৩)

 সমর্পন (৩)

- কাকলি চক্রবর্তী



আমাকে বাকরুদ্ধ করে,

সেই স্ট্রিকটির সাহায্যে

সে গুটি গুটিপায়ে পাড় হয়েগেলে বিস্তীর্ণ রাজপথ।

অন্ধ মেয়েটির আচরনকে আমি দম্ভ ভেবে,

কী ভীষণ বোকামি করেছি ভেবে,

কী করবো বুঝে উঠতে পারলামনা।

মুহূর্তে আমার পৌরুস্বত্ত ভেঙে হলো খানখান।

এতদিনে যে প্রেম আমার মনে অঙ্কুর বিস্তারে হয়েছে

মহিরুহ,

তার সবটাই কী আমার ভ্রম?

তার সমন্ধে আমি যা কিছু ভেবেছি,

তার সবই যে ভুল।

সে যে আমায় দেখেইনি কোনোদিনও,

আমায় নিয়ে ভাবা তো অনেক দূরের কথা।

আমার কল্পনা এমন ভুল ভান্তির জাল

বিস্তার করেছিল যে,

যার মধ্য থেকে সত্যকে আমি দেখতেই চাইনি

কোনোদিন।

কিন্তু এখন যে আরো বেশি ভালবাসতে চাইছে মন,

তার সবকিছুকে আপন করতে এই হৃদয় বদ্ধপরিকর।

তাকে বোঝাতে পারবো আমার ভালোবাসা?

কাজটা আরো কঠিন,

অনেক ধৈর্য্য, অনেক ভালোবাসা আর অনেক বিশ্বাস

নিয়ে তার সামনে গিয়ে দাঁড়াতে হবে।

বিশ্বাস নিজের প্রতি,

আর তার প্রতিও।

পথের দিকে তাকিয়ে নিজেকে খুব অসহায় বোধ হচ্ছে।

এবার সবটাই শুরুর থেকেই শুরু করতে হবে।

তার মনের ইচ্ছে কী

তা তো সেই বলতে পারে।

কতক্ষন  জানিনা এভাবেই পথে দাঁড়িয়ে আমি।


"আপনি কী এখনো এখানে দাঁড়িয়ে?"

নরম মেয়েলি স্বরে ফিরে তাকালাম।

কখন যেন সে এসে দাঁড়িয়েছে আমার পাশটিতে।

এই প্রথম শুনলাম তার কণ্ঠস্বর।

সে আবার বললো,

"আপনার সাথেতো আমার পরিচয় আজকের নয়,

আমরা তো বহুদিন চিনি

দুজন দুজনকে।

আজ নাহয় প্রথম কথা হলো।"

তার চোখে জল।

অশ্রু বিন্দু টুপ্ টাপ ঝরে পরছে তার গালবেয়ে।

গোপনে আমার চোখও অশ্রু ঝড়ায়।

ধরলাম তার হাত,

সেও পরম নির্ভরতায় আঁকড়ে ধরলো আমার হাত।

আমরা দুজন এগিয়ে চলি জনবহুল জনপথ।

দুটি প্রাণ হয়ে একে অপরের পরিপূরক।।


সমাপ্ত।

Post a Comment

0 Comments