সত্যি ঘটনার অবলম্বনে
গ্রহণ (৩)
- কাকলি চক্রবর্তী
গ্রহণের তৃতীয় পর্ব প্রকাশের আগে
আমি কয়েক টা কথা বলতে চাই।
আমি এই লেখার মাধ্যমে একটি মেয়ের যন্ত্রনার
কথা বাইরে নিয়ে এসেছি মাত্র।
কারোর মনে আঘাত করা বা যন্ত্রনা দেবার
কোনো অভিপ্রায় আমার নেই।
আমার দেহের সর্ব শক্তিকে একত্রিত করে
আমি চোখ মেলে তাকালাম।
আমার দেহে চেপে রয়েছে কেউ।
একটু একটু করে ক্রমশঃ গ্রাস করছে আমায়,
যেভাবে রাহু গ্রাস করে চাঁদকে
অল্প আবছা আলোয় এ কার অবয়ব?
কে?
বাবার মত কেউ আমার দেহে প্রবেশ করছে
একটু একটু করে।
আমি অন্ধ হলাম,
বধির হলাম,
অবশেষে জড়োবত হয়ে জ্ঞান হারালাম।
নাকি জ্ঞান হারাবার অভিনয় করলাম?
আর শব্দ ও বেরোলোনা মুখ দিয়ে।
লড়াই করার শক্তি বা ইচ্ছে কোনোটাই আর
রইলোনা।
লজ্জা, লজ্জা, কী লজ্জা।
মরে গেলাম মরমে।
লড়াই, প্রতিরোধ, আক্রমণ করবো কার সাথে?
সেই রাজা,
যে তরবারি হাতে সব সময় আমায় রক্ষা করার
শপথ নিয়েছিল তার সাথে?
কেন? কেন?
কেন এমন হলো?
পাশের ঘর থেকে মা চিৎকার করে বলে উঠলেন,
"না, না, না, ওকে ছেড়ে দাও,
ছেড়ে দাও, চলে যাও তুমি।
সোনাই, সোনাই রে,,,,,,।"
মায়ের চিৎকার ধীরে ধীরে কান্নার রূপ নিলো।
সেই চিৎকার বা কান্নায় বদল ঘটলোনা কোনো কিছুর।
সেই শুরু,
এই ঘটনা প্রায়ই ঘটতে থাকলো।
ভাবলাম পালিয়ে যাবো,
কিন্তু কোথায়?
মায়ের অসহায় মুখটা দেখে পালিয়ে যাবার কথাও
ভাবতে পারিনা।
লোক লজ্জার ভয়ে থানা পুলিশ করার কথা
চিন্তাও করতে পারিনা।
ধীরে ধীরে প্রতিবাদ বা প্রতিরোধ করার
প্রবণতাটাও হারিয়ে গেল।
এই সব কিছুর মাঝে,
মায়ের ব্যবহার বদলে গেল আশ্চর্যজনক ভাবে।
মা এখন আমায় আদর করেন।
মায়ের বুকে মাথা রেখে কাঁদি,
মা আমায় জড়িয়ে ধরে কাঁদেন।
দুটি নারী মন এক হয়ে যায় ব্যথার অবর্তনে।
প্রতি রাতে হিংস্র শ্বাপদের মত আমার ওপর
ঝাঁপিয়ে পরেন বাবা,
আর আমি হরিণ শিশুর মত খাটে মিশে যাই।
আমাদের শোবার স্থান আলাদা হলেও
ঘটনা বদলায় না।
মা পাগলের মত চিৎকার করেন,
হাতের কাছে যা পান তাই ছোড়েন।
কিন্তু তাতে দৃশ্যর পট ভূমিকায়
কোনো বদল ঘটে না।
ক্রমশঃ

0 Comments