অবলা বান্ধব পর্ব - ২

 অবলা বান্ধব পর্ব - ২

তানবীর আহমেদ 


আমাগর গেরামের নামি দামি, পয়সাওয়ালা, সমাজের হর্তাকর্তাদের একজন হইলেন, শ্রী কেশব চন্দ্র সেন। গত কাইল তার বাড়িতে আমাগর পাড়ার কেলাবের সক্কলের দাওয়াত ছিলো। সেই হিসেবে তার বাড়িতে যাওয়া। খাওয়া দাওয়া শেষ কইরা কেশব বাবুর লগে বাড়ির উঠানে বইসা পান খাইতাছি, তখন কেশব বাবুরে জিগাইলাম, জনাব আপনের মাইয়া তো আই এস সি তে ভালো পাস দিছে। অহনে কি ভাবতাছেন, কি নিয়া মাইয়ারে পরাইবেন? শহরে কবে পাঠাইবেন? 



কেশব বাবু তেলে বেগুনে জ্বইলা উঠলো! হুংকার ছাইরা আমারে কইলো- অবলা বান্ধব, মাইয়াগর জন্ম সংসার ধর্ম পালন করার জন্য, লেহাপড়া করার জন্য না। এইডা পোলাগর কাম। যতদূর পড়াইছি অনেক বেশি পড়াইছি। মাইয়ার অহন বিয়ার বয়স অইছে তার লাইজ্ঞা পাত্র দেখতাছি ভালো একটা পোলা পাইলে তারে বিয়া দিয়া দিমু। বয়স ১৬ হইয়া গেছে। আর দেরি করলে মাইয়া বুড়ি হইয়া যাইবো। বুড়ি মাইয়ারে বিয়া করবো কেডা? কেশব বাবুরে কইলাম এইডা তো বাইল্যবিবাহ, এইডা অন্যায়! কেশব বাবু কইলো সংসার ধর্ম পরম ধর্ম। সব দেবীরা এই ধর্ম পালন কইরা আইছে। এই ধর্ম থিক্কা দুরে যাওন ডাই অন্যায়। আমি কেশব বাবুরে কিছু কইতে যামু তার আগেই সে হাত উপরে তুইলা আমারে থামাইয়া দিয়া কইলো, তুমি ভীন প্রজাতির প্রানি, তুমি এইগুলা বুঝবানা অবলা বান্ধব! কেশব বাবু কইলো - আমার মাইয়ারে আমি মা লক্ষী কইরা গইড়া তুলুম। আমিও তারে পেন্নাম জানাইয়া বাড়ির পথে রওনা দিলাম। 

শুধু একখানা প্রশ্ন করতে চাই কেশব বাবুরে -  

মাডি দিয়া লক্ষী বানাইবার পারবেন, রক্ত মাংসের মানুষেরে কেমনে লক্ষী বানাইবেন?

Post a Comment

0 Comments